বিয়ের বাজার রেখে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) এর জন্য শহিদ হওয়া এক সাহাবীর করুন ঘটনা। প্রতেক মুসলমানের এটা জানা উচিত।
আসসালামু আলাইকুম
হজরত সাদ সালামীর ঘটনা:
সাদ সালামী নামের এক কালো সাহাবি একদিন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) এর কাছে এসে কেঁদে ফেললো।
আল্লাহর নবী মায়ার নবী তখন বলতেছে ও সাদ কোন জিনিস তোমাকে এতো কাদায়, কিসের জন্য তোমার চোখে পানি বলো আমাকে।সাদ সালামি বলে ইয়া হাবিবআল্লাহ, আমার বড়ো ভই হয় আমি আপনার একটা সুন্নাত মানতে পারি নাই বলে আল্লাহ যেনো আমাকে জাহান্নামে পাঠিয়ে না দেই। (আল্লাহ আকবার)
রাসুল (সা:) বললেন হে সাদ কোন সুন্নাত তুমি মানতে পারো নি। সাহাবী বললেন ইয়া রাসুলআল্লাহ ৮ টি মাস ইসলাম গ্রহন করেছি, কিন্তু আমি কালো বলে, আমার চেহারায় বসন্তের দাগ বলে,এবং আমি গরিব বলে কেউ আমার সাথে তার কন্যা বিবাহ দিতে চায়না।
এখন আমার বড়ো ভয় হয় আল্লাহ আমাকে এজন্য জাহান্নামে পাঠিয়ে না দেয় এজন্য আমি কাঁদতেছি।
নবী বললেন সাদ তুমি কেদো না তুমার কান্না যে আমি সহ্য করতে পারছি না। তুমি যাও আমর বিন ওহাবের বাড়িতে যাও গিয়ে বলো আমি নবী তার দুনিয়ার সুন্দরি কন্যার সাথে তুমার বিবাহ ঠিক করেছি!
সাদ সালামী তার বাড়িতে গেল গিয়ে আমর বিন ওহাবকে ডেকে বললো আমি আল্লাহর নবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) এর সাহাবী সাদ সালামী। প্রীয় নবী আমার সাথে আপনার কন্যার বিবাহ ঠিক করেছেন।
আমর বিন ওহাব তার দিকে তাকিয়ে সে কালো, আর গরিব হওয়ায় তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে তাকে ফিরিয়ে দেই।
তাই সে আবার কাঁদতে কাঁদতে নবীরর কাছে চলে আসে নবী তখন তাকে বলে ও সাদ তুমি কেঁদো না। তোমার আমার প্রতি এত ভালোবাসার জন্য আল্লাহ তোমাকে জান্নাতে আমার পাশে অবস্থান দিয়েছেন।
এদিকে আমর বিন ওহাবের দুনিয়ার সব থেকে সুন্দরি কন্যার কানে খবরটা চলে যায়। তিনি তার পিতাকে বলেন আব্বাজান এ আপনি কি করেছেন সয়ং আল্লাহর নবী আমার জন্য পাএ ঠিক করেছেন আর আপনি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন!
আপনি তারাতারি যান যেয়ে তার কাছে ক্ষমা চান আর বলেন আমি বিবাহের জন্য প্রস্তুুত আছি।
আমর বিন ওহাব নিজের ভুল বুঝতে পারে আর তারাতারি রাসুল (সা:) এর কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন এবং বলেন আমার কন্যা বিবাহের জন্য রাজি।
নবী সাদ সালামীকে বললেন সাদ আমি নিজে তোমার বিবাহের মোহরানা ৪০০ দিরহামে ধার্য করলাম।(আল্লাহ আকবার)
সাদ সালামি বললো ইয়া হাবিব আল্লাহ আমি গরিব বলে কেউ আমার সাথে তার কন্যার বিবাহ দিতো না আমি এতো অর্থ কোথায় পাবো?
নবী বললেন যাও ওসমানের কাছে যাও সে তোমাকে ২০০ দিরহাম দিবে। সাদ ওসমান (রা:) এর কাছে গেলে সে তাকে ২০০ এর একটু বেশি দিয়ে পাঠিয়ে দেয় যেহেতু সে বিবাহ করবে।
সাদ ফিরে এসে নবীকে বলে রাসুল (সা:) কে বলে ইয়া হাবিবআল্লাহ ওসমান আমাকে ২০০ দিরহামের একটু বেশিই দিয়েছে কিন্তু একখনো তো কিছু দিরহাম বাকি আছে!
রাসুল (সা:) এবার বললেন এবার আলীর কাছে যাও সেও তোমাকে ২০০ দিরহাম দিবে। আলী (রা:) এর অভাব থাকার পরো রাসুলের কথা বলে সে কষ্ট করে ২০০ দিরহাম ও একটু বেশি অর্থ দিয়ে দেয়।
এবার রাসুল (সা:) তাকে বললো যাও এবার তুমি বাজারে যাও তোমার স্ত্রীর চক্ষু যুরিয়ে যাবে এমন বস্তুু ক্রয় করে নিয়ে আসো।
হজরত সাদ সালামী বাজারে গিয়ে যখন জিনিসগুলো ক্রয় করবে তখনি হজরত বিলাল (রা:) এর কন্ঠে জিহাদের ডাক শুনতে পেলেন।
তখনি তিনি আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন আল্লাহ,,,,,আমি সাদ বিবাহ করে আমোদ প্রমোদ করবো আর আমার নবী জিহাদের ময়দানে কাফেরদের সাথে জিহাদ করে নিজের রক্ত ঝরাবে তা কেমন করে হয়।
সাদ সালামি সেই মাএ বিয়ের বাজার না করে ৪০০ দিরহাম দিয়ে যুদ্ধের বাজার করে যুদ্ধে চলে গেল একসময় যুদ্ধ করতে করতে শহিদ হয়ে গেল।
যুদ্ধ শেষে দেখে সাদ রক্তমাখা শরিল পড়ে আছে মায়ার নবী দয়ার নবীর চোখ দিয়ে ঝর ঝর করে পানি পরতে লাগলো। এমন সময় নবী একটু মুচকি হাসলে,তারপর চক্ষু ফুিরিয়ে নিলেন।
হজরত আনাস( রা:) নবীজীর কাছে এসে বললেন ইয়া রাসুলআল্লাহ আপনি একটু আগে কাঁদতে কাঁদতে কেনোই বা হাসলেন আবার তারপর চোখ ফিরিয়ে নিলেন।
রাসুল( সা:) বললেন ওগো সাহাবিরা আমি যা দেখতে পাই তুমরা তা পাওনা। আমি কাদি এজন্য কারন আমার সাদ বিয়ের বাজার করতে গিয়ে যখন শুনতে পায় আমি নবী যুদ্ধে যাবো তখন সে বিয়ের বাজার না করে যুদ্ধের বাজার করেছিল।
তারপর আমি নবী হাসলাম এজন্য কারন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সাদ সালামির ওপর খুশি হয়ে দুনিয়ার সুন্দরি আমর বিন ওহাবের কন্যার বদলে তার সাথে জান্নাতের হুরেদের বিবাহের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
আর হুরেরা যখন দল বেধে সাদকে নিতে আসছিল তখন তাদের কাপর সরে যাচ্ছিল,এজন্য আমি আমার চোখ ফিরিয়ে নিলাম।
Comments
Post a Comment